top of page
Search

অন্যবেলা ।। ছেলেটি।

  • Writer: Mokammel Hoque
    Mokammel Hoque
  • Sep 16, 2024
  • 2 min read

অন্যবেলা ।। ছেলেটি।

হন্ত দন্ত হয়ে বাস থেকে নামলাম। অসহ্য রকম ঠেলাঠেলি ঠেলে নামতে হয়েছে। মেজাজটা ভীষনরকম বিগড়ে আছে। সময় সময় সবকিছু অসহ্য ঠেকে। বেঁচে থাকাটাই একটা পাপ যেন। কি ভাবছি না ভাবছি, বাস থেকে নেমেই এক লাফে উঠলাম ফুটপাতে। একটু হেঁটেই সামনের ছাউনিটায় বসলাম। আজকাল ফুটপাতে নতুন নতুন ছাউনি দেখা যায়; বেশ শুনশান, তকতকে। সন্ধ্যায় ডুবতে যাচ্ছে শহরটা। আমি আমার ব্যাগটা হাঁটুর উপর নিয়ে দ্রূত চেইন খুলে ডকুমেন্টটা বের করি। একদম নিচের দুটি লাইন কেটে দিতে হবে। বাসের ভিতর যখন আমি ঝুলছি, তখন গবেট উকিলটা ফোন করে ঐ দুটি লাইন কেটে দিতে বলে। আমি বাসের ভিতর নরকে হাবুডুবু খাচ্ছিলাম; এক হাতে ব্যাগ, আরেক হাতে ঝুলছি, আর মন রেখেছি পকেটে - কেউ ঠেলাঠেলিতে আমার পকেটকে শূন্য করে দিচ্ছে কিনা!

ওইসময় উকিল সাহেবের ফোন; আর তাঁর সুচিন্তিত প্যানপ্যানানি! ব্যাটা কত যুক্তি দিয়ে ফেলল লাইন দুটি বাদ দেয়ার জন্য; আর যখন ওই লাইন দুটি লিখে দিল, তখন আমাকে এমন করে বোঝাল যে ওই লাইন দুটি না লিখলে আমি বেহেস্তও পাবনা। ওফ্ জঘন্য!

আর আমার আবার একটা জিনিষ মাথায় চাপলে এক মূহুর্তও সয়না; করতেই হবে, সারতেই হবে; আর কোন পথ নেই, যেখানেই থাকিনা কেন, করতেই হবে দ্রূত। তাইতো নেমে গেলাম বাস থেকে। দলিলটা নিয়ে শেষ পৃষ্ঠায় যেয়ে লাইন দুইটা আবার পড়লাম। কলমটা বের করার জন্য পকেটে হাত দিলাম; না, কলম নেই। পড়ে গেল নাকি! কি যন্ত্রণা! এদিক ওদিক তাকাই আমি। রাগে গা জ্বলছে আমার। দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বামে তাকাই; দেখি একটা ছেলে বসে আছে; নিয়নের বাতির দিকে তাকিয়ে কিছু একটা ভাবছে; ডান হাতটা কপালে ঠেকানো - তারই দুটি আঙ্গুলে বলপেন একটা মৃদু দুলছে। আমি কিছুটা ইতস্তত করে কলমটা খুঁজলাম; ছেলেটা শুধু নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে আমার দিকে তাকাল; তারপর ততোধিক নির্লিপ্ততায় বলপেনটা দিল আমাকে। ওটা পেয়েই আমি আবার কাগজটায় মন দেই; বলপেনটা খুলতে যাই - একবার, দুইবার - অবচেতনে; খুলছেনা কেন! এবার আমি তাকাই পেনটার দিকে; সচেতনে খুলতে চেষ্টা করি; এত শক্ত কেন! মুখটা খুলছেইনা! পেনটার দিকে তাকাই আবার - নিছক একটা বলপেন; এত শক্ত কেন মুখটা? আমি ছেলেটার দিকে তাকাই, আবার চেষ্টা করি প্রচন্ড শক্তি দিয়ে। নাহ, পারছিনা; হাঁপিয়ে উঠি আমি। মেজাজ আরো ঘোলা করে ছেলেটার দিকে তাকাই; বলি, খুলছেনা কেন? তার দিকে বাড়িয়ে দেই তার বলপেন। ছেলেটা আগের মতই নির্লিপ্ত; উদাসিনতার ছন্দটায় কোনরকম হেরফের না করেই নেয় কলমটা; নিজের চোখের সামনে তুলে ধরে - এক কি দু'টা ক্ষণ; তারপর বলপেনের মুখটা তার নিজের মুখের সামনে এনে ছোট্ট একটা ফুঁ দেয়; তারপর আবার বাড়িয়ে দেয় আমার দিকে। আমি যেন বিকারহীন; নেই ওটা, কোলের কাছাকাছি এনে ওটার মুখটায় মৃদু টান দিতেই ওটা খুলে গেল! আমি বিকারহীন চেয়ে থাকি কলমটার দিকে; হাতের পেশীতে তখনও জোড়ে টেনে খোলার একটা চিনচিনে ব্যাথা; হা করে তাকাই ছেলেটার দিকে; সে উঠে হাঁটতে শুরু করেছে - উদাসিনতার ছন্দটায় চিড় এখনও ধরেনি একটুও; বোবা আমি তাকিয়েই থাকি তার চলে যাওয়ার পাণে।

 
 
 

ความคิดเห็น


Copyright © 2024 XR Global. All Rights Reserved.

All individual works are copyright-protected by owners & contributors. 

White Structure
White Structure

USA Address: 1137 Converse Street, Longmeadow, Massachusetts, MA 01106, USA

UK Address: 53A Chalvey Road West, Slough, SL1 2NJ, United Kingdom

White Structure
bottom of page